ডেস্ক: দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের ফেজিং কাউন্টি থেকে এবার বিরাট তথ্য সামনে এলো। বিজ্ঞানীরা কয়েক দশক ধরে যে রহস্যের সমাধান করার চেষ্টা করছিলেন এবার তাতে মিলল সাফল্য। পৃথিবীর পাতালের দরজার রাস্তা নাকি খুলে গিয়েছে। জিয়াওহাই তিয়ানকেং থেকে ওই রাস্তা খুলেছে। বিশ্বের বৃহত্তম রহস্যময় গর্ত গুলির মধ্যে এটিও হলো অন্যতম।
জিয়াওহাই তিয়ানকেং নাকি নরকের রাস্তা, এমনটাই বলছেন স্থানীয় মানুষ। সিঙ্কহোলগুলির আকার এবং আয়তন এতটাই বৃহৎ যার ভিতর এক অন্য জগৎ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। জনপ্রিয় একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জিয়াওঝাই সিঙ্কহোলটির গভীরতা ৬৬০ মিটার। এটির দৈর্ঘ্য ৬০০ মিটার এবং প্রস্থ ৫০০ মিটারেরও বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।
বর্ষাকালে জলপ্রপাত বয়ে যায় এর ওপর দিয়ে। প্রাচীনকাল থেকে ওই এলাকায় অবস্থিত বিশাল সিঙ্কহোল সম্পর্কে জানতেন স্থানীয়রা। তবে ১৯৯৪ সালে বিষয়টি প্রথম সামনে আসে। জানা গিয়েছে যে,কিছু কালো দাগ লক্ষ্য করা গিয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের ফেংজি কাউন্টির বাইরের একটি সবুজ অঞ্চলে। এলিয়েনরা যেন সেখানে এসে নিজেদের পায়ের ছাপ রেখে গিয়েছে বলে মনে হয়।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই রহস্যময় গর্তগুলি সৃষ্টি হয়েছিল উল্কাপাতের ফলে। অনেকেই মনে করেন, ১.২৮ লক্ষ বছরেরও বেশি সময় ধরে ধীরে ধীরে তৈরি হয়েছিল এই বিশালাকার গর্তগুলি। শিলা গুলি জল মাটির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নিচে পৌঁছে গিয়েছে এবং ধীরে ধীরে চুনাপাথর ধ্বংস করেছে হাজার হাজার বছর ধরে। অম্লীয় জলের স্রোত সুরঙ্গ এবং গুহাগুলির ফাটলগুলিকে প্রশস্ত করেছে।
সেই পাথরের ছাত্রী ভেঙ্গে পড়েছিল। তাতেই খুলে যায় সিঙ্কহোলগুলি। প্রায় ২০০টি দৈত্যাকার সিঙ্কহোলের সন্ধান মিলেছে চীনে। প্রধানত দক্ষিণ-পশ্চিমে গুয়াংসি ঝুয়াং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল থেকে মধ্য শানসি প্রদেশ পর্যন্ত এগুলি রয়েছে। স্থানীয় ভাষায় এগুলির নাম তিয়ানকেং অর্থাৎ স্বর্গীয় গর্ত। এগুলির আন্ডারওয়ার্ল্ডে প্রায় ১২৮৫ উদ্ভিদ এবং বিভিন্ন বৈচিত্র্যময় প্রাণী প্রজাতির বসবাস।
বিশাল আকার হওয়া সত্বেও পাহাড় এবং সবুজ বনের মধ্যে থাকা এই তিয়ানকেংগুলি খুঁজে পাওয়া বিজ্ঞানীদের পক্ষে ভীষণ কঠিন। সর্বশেষ গর্তটি ২০২২ সালের মে মাসে গুয়াংজিতে আবিষ্কৃত হয়। ওই সিঙ্কহোলে নেমে অনুসন্ধানকারীদের জানায়, এটি ১৯২ মিটার গভীর এবং ৩০৬ ফুট চওড়া। এমনকি সিঙ্কহোলের নীচে ১৩১ ফুট উঁচু প্রাচীন গাছ সহ একটি প্রাচীন বনের অস্তিত্ব ছিল।