ডেস্ক: মঙ্গলবার বিকাশভবনের সামনে ঘটা কাণ্ডে শোরগোল ফেলে দেয় গোটা রাজ্যে। পাঁচ জন এসএসকে শিক্ষিকা বিকাশ ভবনের সামনে দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাদের মধ্যে কেউ আরজিকরে চিকিৎসাধীন কেউ আবার এসএসকেএম হাসপাতালে।
সূত্র অনুযায়ী জানা যায়, অন্যায় ভাবে বদলির প্রতিবাদ করেই মঙ্গলবার বিকাশ ভবনের সামনে জড়ো হয় শিক্ষকেরা। দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তারা। দাবি তোলেন শিক্ষামন্ত্রীর সাথে দেখা করার। তবে ঝামেলা বাঁধে বিক্ষোভকারীদের পুলিশি বাধা দেওয়ার সময়। ঘটনাস্থলে 5জন শিক্ষিকা শিশি বার করে কিছু একটা মুখে ঢেলে নেন। তারপরেই তাদের মুখ থেকে গ্যাঁজ বের হতে দেখা যায়। তৎক্ষণাৎ ই তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আরজিকরে চিকিৎসাধীন 3 জনের মধ্যে একজনের বিষ পাকস্থলীতে চলে গিয়েছিল। তাঁকে আইসিইউয়ে রেখে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। বাকি 2 জন মেডিসিন ওয়ার্ডে রয়েছেন। সকলেরই শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। এনআরএসে দু’জনের মধ্যে একজনের রাতে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছিল। ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে তাকে। সেখানে 2 জন কে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তাঁরও শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।
সেই ঘটনার সময় শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু আজও ভেতরে ছিলেন কিনা তা জানা যায়নি। তবে তিনি এই শিক্ষিকাদের বিজেপি ক্যাডার বলে আখ্যা দেন। এছাড়াও শিক্ষিকাদের ওপর সরকারি নির্দেশিকা অমান্য করা, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া, আত্মহত্যার চেষ্টা, সরকারি কর্মচারী কে আঘাত করার সহজ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে উত্তর বিধান নগর থানায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যা বেলায় ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত হওয়ার ফরেন্সিক টিম। এবং ঘটনাটি খতিয়ে দেখেন তারা।
এর পরেই এই ঘটনার প্রতিবাদে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য সরকারকে দোষারোপ করে টুইট করেন, “আজ বিকাশভবনের সামনে ৫ জন এসএসকে-এমএসকে শিক্ষিকা নিজেদের বাড়ি থেকে অন্যায়ভাবে বদলির প্রতিবাদে বিষ পান করেছেন। তাঁরা যে সামান্য টাকা মাসোহারা পান, তাতে তাঁদের আলাদা থাকার জায়গা জোগাড় করা সম্ভব নয়। প্রতিহিংসাপরায়ণ পশ্চিমবঙ্গ সরকার শাস্তিমূলক বদলিকে নতুন অস্ত্র বানিয়ে ফেলেছে।”
5 SSK & MSK Teachers consumed poison at Bikash Bhaban today while protesting their unfair transfer far away from home.
They draw paltry sum per month & it won't be feasible for them to afford accommodation even.
This is punishment posting weaponized by the vindictive WB Govt.— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) August 24, 2021
অন্যদিকে তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বলেছেন, “কেন এমন ঘটনা ঘটল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তা আমরা তদন্ত করে দেখার চেষ্টা করছি।” যদিও এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বুধবার বিস্ফোরক মন্তব্য করেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। আন্দোলনরত শিক্ষিকাদের ‘বিজেপি ক্যাডার’-এর তকমা দিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, “মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল সরকার 1লা ডিসেম্বর, 2020 থেকে এসএসকে এবং এমএসকে-গুলিকে বিদ্যালয় শিক্ষা বিভাগের অধীনে এনে একটি সুসংবদ্ধরূপ দেয়। সহায়ক সহায়িকাদের সাম্মানিক বাড়িয়ে মাসিক 10340 টাকা এবং সম্প্রসারক সম্প্রসারিকাদের সাম্মানিক বাড়িয়ে 103390 টাকা করা হয়।”
• বাম সরকারের আমলে পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন বিভাগের অধীনে SSK এবং MSK-র সহায়ক/সহায়িকা, সাম্প্রসারক/সম্প্রসারিকারা নামমাত্র সাম্মানিক-এর বিনিময়ে কাজ করতেন। কাজের নিশ্চয়তা, আর্থিক নিরাপত্তা এবং অবসরকালীন সুযোগসুবিধা বলে কিছু ছিলো না। (১/৬)
— Bratya Basu (@basu_bratya) August 25, 2021