নারী নির্যাতন নিয়ে কি বললেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু?

ডেস্ক: কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় তোলপাড় গোটা দেশ। সেই আবহেই মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্য থেকে একের পর এত মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনা সামনে এসেথে। কোথাও নাবালিকা স্কুলে শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছে, কোথাও ধর্ষণের শিকার হয়েছেন শিক্ষানবিশ নার্স, কোথাও আবার দুই কিশোরীর দেহ ঝুলতে দেখা গিয়েছে গাছে। সেই আবহে এবার নারী নির্যাতন এবং মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই-দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি বলেন, “মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ, বিকৃত আচরণের বিরুদ্ধে, মহিলাদের দুর্বল, অযোগ্য, নির্বোধ ভাবার মানসিকতা কাটিয়ে ওঠার সময় এসেছে। এই ধরনের মানসিকতা যাঁদের, তাঁরা মহিলাদের ভোগ্যপণ্য হিসেবেই দেখেন। আমাদের মেয়েরা যাতে সমস্ত ভয়কে জয় করে স্বাধীন হয়ে ওঠে, তাদের পথে যাতে কোনও বাধা-বিপত্তি না আসে, তা সুনিশ্চিত করা আমাদের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।”

গত ৯ অগাস্ট কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় তিনি হতাশ এবং আতঙ্কিত বলেও জানান রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, “যথেষ্ট হয়েছে। কোনও সভ্য সমাজে মা-বোনেদের উপর এই ধরনের নৃশংসতা কাম্য নয়। নির্ভয়াকাণ্ডের পর ১২ বছর কেটে গিয়েছে, অসংখ্য ধর্ষণের কথা ভুলেই গিয়েছেন মানুষজন। এই সম্মিলিত স্মৃতিভ্রংশ মেনে নেওয়া যায় না।”

রাষ্ট্রপতি জানান, ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসের ঘটনায় স্তম্ভিত গিয়েছিলেন সকলে। ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল গোটা দেশ। আর এক নির্ভয়ার যাতে এমন পরিণতি না হয়, শপথ নিয়েছিলেন সকলে। কত পরিকল্পনা, কত উদ্যোগ শুরু হয়। কিন্তু মেয়েরা যদি নিরাপদ বোধ না করেন, সবকিছুই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। গত ১২ বছরে অজস্র এমন ঘটনা ঘটেছে, কয়েকটিই আলোড়ন ফেলেছে মত রাষ্ট্রপতির। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সকলে বিস্মৃত হয়েছেন, কোনও শিক্ষা মেলেনি বলে মত তাঁর।

রাষ্ট্রপতির মতে, ইতিহাসের মুখোমুখি হতে ভয় পায় যে সমাজ, তারাই সম্মিলিত ভাবে বিস্মৃতির সাগরে ডুব দেয়। ভারতকে ইতিহাসের কাছে জবাব দিতে হবে তাই সম্মিলিত ভাবে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের মোকাবিলা করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। শুধুমাত্র বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনাই নয়, সম্প্রতি দক্ষিণের চলচ্চিত্র জগৎ থেকেও মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। তাই রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, আর জি করের ঘটনায় চিকিৎসক থেকে সাধারণ মানুষ যখন প্রতিবাদ চালিয়েছেন, সেই সময়ও একের পর এক ঘটনা ঘটে গিয়েছে। তাই আত্মসমীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে বলে মত তাঁর।