নয়া রূপে ‘ লেডি জাস্টিস ‘ !

ডেস্ক: দেশের বিচারব্যবস্থা আর ‘অন্ধ’ রইল না। চোখের পট্টি খুলে গেল ‘লেডি জাস্টিসে’র। সুপ্রিম কোর্টের বসানো ‘লেডি জাস্টিসে’র হাত থেকে সরিয়ে নেওয়া হল তলোয়ারও। তার পরিবর্তে হাতে উঠল সংবিধান। বার্তা দেওয়া হল, শুধু শাস্তিপ্রদানই লক্ষ্য নয়, বরং সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠার গুরুদায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ দেশের বিচারব্যবস্থা।

দেশের সর্বোচ্চ আদালতে ‘লেডি জাস্টিসে’র যে মূর্তি এতদিন ছিল, তার চোখ ছিল বাঁধা। একহাতে ছিল দাঁড়িপাল্লা, অন্য হাতে তলোয়ার। চোখ বেঁধে রাখার অর্থ ছিল, আইনের চোখে সকলেই সমান। আদালত অর্থ, ক্ষমতার নিরিখে যে বাছবিচার করে না, তা বোঝানো হতো। অন্যায়ের বিরুদ্ধে শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা বোঝাতে ‘লেডি জাস্টিসে’র হাতে ছিল তলোয়ার।

কিন্তু এবার যে নয়া মূর্তি উন্মোচিত হল, তা সবদিক থেকেই আলাদা। চোখে ফেট্টি বাঁধা নেই। হাতের তলোয়ারটিও গায়েব, তার জায়গায় উঠেছে সংবিধান। দেশের বিচারব্যবস্থা যে অন্ধ নয়, শুধুমাত্র শাস্তিপ্রদানই যে বিচারব্যবস্থার লক্ষ্য নয়, তা-ই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নয়া মূর্তিতে। সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতিদের লাইব্রেরিতে নয়া মূর্তিটি বসানো হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নির্দেশেই মূর্তিটি পাল্টানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ঔপনিবেশিক ছত্রছায়া থেকে বেরিয়ে আসতে যেমন ভারতীয় দণ্ডবিধির পরিবর্তে দেশে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা চালু হয়েছে, সেই রীতি বজায় রেখেই ‘লেডি জাস্টিসে’র মূর্তিটি পাল্টানো হয়েছে বলে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর।

প্রধান বিচারপতির দফতরকে উদ্ধৃত করে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ঔপনিবেশিক শাসনের ছত্রছায়া থেকে বেরিয়ে আসার পক্ষপাতী প্রধান বিচারপতি। বলা হয়েছে, দেশের আইন মোটেই ‘অন্ধ’ নয়। বরং সকলকে সমান চোখেই দেখে আইন। তাই মূর্তি পাল্টানোর নির্দেশ দেন তিনি। সংবিধান অনুযায়ীই যে বিচারব্যবস্থা চলে, তার বোঝাতেই তলোয়ারের জায়গায় সংবিধান উঠেছে হাতে। মূর্তির ডান হাতে দাঁড়িপাল্লাটি রেখে দেওয়া হয়েছে, কারণ এর মাধ্যমে সমাজে ভারসাম্য বজায় রাখার বার্তা যায়। কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার আগে আদালত যে সব পক্ষের দলিল শোনে, দাঁড়িপাল্লা তারই প্রতীক।’লেডি জাস্টিসে’র মূর্তিটি আসলে বিচারব্যবস্থার নৈতিক শক্তির রূপক। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই ওই মূর্তির ব্যবহার চোখে পড়ে।