
ডেস্ক : আকাশযানের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মহাকাশেই কেটে গেল ৯ মাসেরও বেশি সময়। অবশেষে বুধবার ভোরে সুনীতা উইলিয়ামস, বুচ উইলমোরদের নিয়ে আটলান্টিকে সফ্যটল্যাল্ড করল স্পেস এক্স ড্রাগন স্পেসক্রাফট। সমুদ্রে নামার পর মহাকাশকারীদের ক্যাপসুল থেকে বের করে আনেন উদ্ধারকারীদল।
টানা ২৮৬ দিনে সুনীতারা পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করেছেন ৪৫৭৭ বার। পাড়ি দিয়েছেন ১৯৫২ লাখ কিলোমিটার। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে টানা ১৭ ঘণ্টার যাত্রাপথে প্রতি মুহূর্তে নজর রাখছিলেন নাসা ও ইলন মাস্কের স্পেস এক্সের বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতেই বায়ুমণ্ডলের ঘর্ষণে প্রবল উত্তপ্ত হয়ে যায় মহাকাশযানটি। কিছুক্ষণের জন্য যোগাযোগ বিচ্ছিন্নও হয়ে যায় পৃথিবীর সঙ্গে। পরে তার ফের স্থাপিত হয়। ফ্লোরিটার অদূরে আটল্যান্টিকে নামার আগে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে হাজার কিলোমিটার উপরে মহাকাশ যানের প্যারাস্যুট খুলে যায় এবং খুব ধীরে ধীরে যানটিকে সুমদ্রবক্ষে নামিয়ে আনে।
সুনীতা উইলিয়ামসের ফেরার জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিল তার গুজরাটের পৈত্রিক গ্রাম। তাঁর মঙ্গল কামনায় শুরু হয়েছিল যজ্ঞ। সুনীতাদের মহাকাশ যান আটলান্টিক ছুঁতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে গুজরাটের মেহসনায় তাঁর ঝুলসান গ্রামের মানুষজন। সুনীতার বাবা দীপক পান্ড্য ছিলেন স্নায়ুবিজ্ঞানী। ১৯৫৭ সালে ভারত থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান তিনি।
উল্লেখ্য, সুনীতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর দুজনেই প্রাক্তন নেভি পাইলট মহাকাশ স্টেশনে যাত্রা করেছিলেন গতবছর ৫ জুন। বোয়িং স্টারলাইনারে চড়ে সেই যাত্রা ও ফিরে আসার সময়সীমা ছিল মাত্র ৮ দিন। কিন্তু একের পর এক যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা যায় স্টারলাইনারে। ফলে দিনের পর দিন পেছতে থাকে সুনীতাদের ঘরে ফেরা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ আনেন যে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জে বাইডেন সুনীতাদের ঘরে ফেরানোর হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন। সুনীতারা ঘরে ফেরার পর হোয়াইট হাউসের তরফে বলা হয়েছে প্রেডেন্ট ট্রাম্প তাঁর কথা রেখেছেন।
স্টারলাইনারে সমস্যা দেখা দেওয়ার পর নাসা দায়িত্ব দেয় ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেস এক্সকে। তার পরই স্পেস এক্সের ড্রাগন স্পেসক্রাফটকে পাঠানো হয় গত সেপ্টেম্বরে। অনে কাটখড় পোয়ানোর পর গত শনিবার আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের সঙ্গে ডক করতে সফল হয় স্পেসএক্সের ড্রাগন স্পেসক্রাফট।
দেশে ফিরলেও অনেক সমস্যা রয়েছে সুনীতাদের সামনে। টানা ৯ মাস মহাকাশে থেকে তাদের শরীরে একাধিক পরিবর্তন হয়েছে। শরীরের মাংসপেশী দুর্বল হয়ে গিয়েছে। রেডিয়েশনে তাদের শরীরে ক্ষতি হতে পারে, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা হতে পারে। তাই তাদের আপাতত রাখা হবে রিহ্যাবে।