“গ্রেফতার না করে তদন্ত হতে পারে” বললেন বিচারপতি, অন্তবর্তী জামিন পেল চার অভিযুক্ত
ডেস্ক: 11 দিনের মাথায় স্বস্তির নিঃশ্বাস নিল তৃণমূল। গত 17 ই মে সোমবার নাটকীয় ভাবে তৃণমূলের চার হেভিওয়েট নেতা ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায় কে গ্রেফতার করে সিবিআই।
তারপর থেকেই জামিন দেওয়া ও না দেওয়ার মধ্যে চলতে থাকে টানাপোড়েন। ইতিমধ্যে দু’বার বেঞ্চ গঠন হয়ে গিয়েছে হাইকোর্টে এবং আজ তৃতীয় দফায় গঠন হল বৃহত্তর বেঞ্চ।
যেখানে সিবিআইয়ের সমস্ত আঁটঘাট বুঝে ঘুঁটি সাজানোর পর ও অন্তর্বর্তী জামিন পেল নারদা মামলায় অভিযুক্ত চার নেতা।
2014 সালে ম্যাথু স্যামুয়েলের করা নারদা স্টিং অপারেশনের ফুটেজ 2016 বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভাইরাল হয়।
যেখানে ঘুষ নিতে দেখা গিয়েছিল রাজ্যের বর্তমান পরিবহন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিধায়ক মদন মিত্র এবং প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় সহ বর্তমান বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী, সুলতান আহমেদ, সৌগত রায়, অরুপা পোদ্দার, পুলিশ আধিকারিক এমএইচ আহমেদ মির্জা, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, বর্তমান বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায় ও শঙ্কু দেব পান্ডা কেও।
কিন্তু 17 ই মে বাকি সকলকে ছেড়ে বিনা নোটিশে রাজ্যপালের অনুমতি নিয়ে তৃণমূলের বাকি চার নেতাদের করা হয় আটক।
মন্ত্রীদের গ্রেফতারি নিয়ে এ রাজ্যের বহু জায়গায় বিক্ষোভ দেখা গেলেও এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টানা ছয় ঘন্টা সিবিআই অফিসে বসে থাকার পরেও সিবিআই আধিকারিকরা কোনমতেই ছাড়তে রাজি হননি অভিযুক্তদের।
ঐদিন রাতে অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হয় অভিযুক্তদের। পরে সে জামিন হাইকোর্ট থেকে খারিজ করে দেয় সিবিআই আধিকারিকরা।
প্রশ্ন উঠেছে বারবার প্রাক্তন তৃণমূল নেতা তথা বর্তমান বিজেপি নেতা মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারী কে কেন করা হলো না গ্রেফতার। তাহলে কোরোনার এমন পরিস্থিতিতে, কলকাতার রাজনীতির সিস্টেমকে বিচ্ছিন্ন করার জন্যই কি বিজেপি নেতাদের এটি ষড়যন্ত্র।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জেলে আটক করার পর থেকেই শারীরিক অসুস্থতার শিকার হয় মদন মিত্র, সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও শোভন চ্যাটার্জি। তাদের পিজির উডবার্ন ওয়ার্ডে করা হয়েছিল ভর্তি। বাংলা নিউজ চ্যানেলের একটি ফুটেজে উডবার্ন ওয়ার্ডের করিডরে মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায় কে দেখা যায় ঘোরাঘুরি করতে। আকস্মিকভাবে ভাবে আরও একজনকে দেখা যায় তাদের সাথে। তিনি ছিলেন শোভন চ্যাটার্জির বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।
আসা যাক মামলার বর্তমান পরিস্থিতিতে, প্রথম শুনানিতে দুই বিচারকের মধ্যে মতবিরোধ শুরু হয় অভিযুক্তদের জামিন দেওয়া নিয়ে। যার কারণে দ্বিতীয় দফায় হাইকোর্টের বেঞ্চ গঠন হয় যেখানে উপস্থিত পাঁচ বিচারপতির সিদ্ধান্তে আসেন যে অভিযুক্তদের সম্পূর্ণ জামিন না দিয়ে গৃহবন্দী থাকতে হবে। এবং এই সিদ্ধান্তের আগামী শুনানির জন্য তৃতীয় বারের জন্য বেঞ্চ গঠন হবে।
শুক্রবার সকালে তৃতীয়বারের শুনানিতে অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হয় অভিযুক্তদের এবং “গ্রেফতার না করে তদন্ত হতে পারে” বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি। জামিন পেলও কোনও সাক্ষাৎকার দিতে পারবে না এই চার নেতা।
আদালতে তরফ থেকে দেয়া হয়েছে শর্ত। নিম্ন আদালতের অন্তর্বর্তী জামিন বহাল রাখল হাইকোর্ট। 2 লক্ষ টাকার বন্ডে জামিন দেওয়া হয়েছে।