ধর্মীয় গোঁড়ামির শিকার মীর, মুসলমান হওয়ায় পুজোর আনন্দ উপভোগ করাতে পড়তে হচ্ছে সমালোচনার মুখে

ডেস্ক: বাংলা ইন্ডাস্ট্রির সুপরিচিত নাম মীর আফসার আলী। কখনো খাসখবরে একজন সাংবাদিক হয়ে, আবার কখনো একজন রেডিও জকি হয়ে, কখনো বা জনপ্রিয় টিভি শোয়ের সঞ্চালক হিসেবে এমনকি স্টেজে ব্যান্ডের সাথে গান বাজনা কিংবা সিনেমায় অভিনয় সবক্ষেত্রেই নিখুঁতভাবে নিজের তাৎপর্য ফেলেছেন মীর। তার প্রতিভার অনুরাগী অনেকেই।

কিন্তু যতই প্রতিভা সেই মানুষটার মধ্যে থাক না কেন তাকে বারে বারে পড়তে হয়েছে ধর্মীয় গোঁড়ামির মুখে। জাতে মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্তর্গত মীর। যার কারণে হিন্দু উৎসব উপভোগ করতে গেলে হেনস্তা হতে হয়। সম্প্রতিই ফেসবুকে মীর একটি ভিডিও পোস্ট করেন যেখানে তিনি তার ছেলেবেলার দুর্গাপুজোয় কাটানো স্মৃতি সকলের সাথে ভাগ করে নিতেন। প্রায় সকলেই জানেন মীর একজন সেল্ফমেড আর্টিস্ট। জীবনে অঙ্ক কাঠখড় পুড়িয়ে আজ এই জায়গায় দাঁড়িয়ে তিনি। ছোটো থেকেই পরিবারে আর্থিক সংকট দেখে বড়ো হয়েছেন তিনি।

Mir, a victim of religious orthodoxy

এবং সেই কারণেই বাকি পাঁচটা বাচ্চাদের মতো উৎসবের দিনগুলি একই যেত না তার। এবং সেই কথাই তিনি ভিডিওটি তে শেয়ার করেন। যেখানে তিনি জানান, অভাবের সংসারে জামা-কাপড় কেনার সামর্থ্য ছিল না, তবুও তাঁকে তাঁর বাবা-মা নতুন জামা কিনে দিতেন।

আর এই ভিডিও র ক্যাপশনে তিনি একটি লেখাও লেখেন। যা ছিল, “নিজেকে আমি বারবার খুঁজে পেয়েছি, ইনোভেট করেছি নতুন আমিকে। সেরকম একটা গল্প, একটা অনুভূতি শেয়ার করছি আপনাদের সঙ্গে…
যদিও ইতিমধ্যে ধর্মের নামে কিছু বিজ্ঞ মানুষ জ্ঞান ফলাতে চলে এসেছেন। এত যুগ বাদেও মানুষকে বোঝানো গেল না যে ধর্ম যার যার নিজের ব্যাপার কিন্তু উৎসব সবার।
যাক গে। বড় বড় মনীষিরা যেটা করে যেতে পারেননি, সেটা আমার মতন একজন অতি সামান্য ক্ষুদ্র মানুষ কি করে পারবে। এত দিন বাদেও এটা যিনি বুঝে উঠতে পারলেন না, তিনি ভবিষ্যতেও পারবেন না। তাঁর জন্য করুণা। আর বুক ভরা ভালবাসা।”

Mir, a victim of religious orthodoxy ▲

“এই ভিডিওটি হতে পারে একটি বিজ্ঞাপনী প্রচার কিন্তু এর মাধ্যমে বলা কথাগুলো আমার ছেলেবেলার সঙ্গে যুক্ত।
বহু কষ্টে বেড়ে ওঠার সময়কার এক অধ্যায়। যেদিন মির্চির অফিসে বসে এটা নিয়ে পরিকল্পনা হয়েছিল, ভেবেছিলাম আমার ক্ষুদ্র জীবনের এই বিশেষ পর্বটা মানুষের মন ছুঁয়ে যাবে, একটু হলেও তাঁদের বাবা-মা, তাঁদের শৈশবের দিনগুলোয় ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। এখন দেখছি মস্ত বড় ভুল করেছি।
যাই হোক… বড় একটা শিক্ষা হল আমার। অশেষ ধন্যবাদ তাঁদের যাঁরা বার বার মনে করিয়ে দেন আমি শুধুই একজন মুসলমান, আর অন্য কোনো পরিচয় নেই মীরের। আপনারা ভালো থাকবেন। বড্ড হতাশ হলাম। আবার।”

তবে জানিয়ে রাখি এটা প্রথমবার নয়, এর আগেও তাকে এসব বিষয় ভোগ করতে হয়েছে। বেশ কিছু দিন আগে গণেশ চতুর্থী উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে ট্রোল হতে হয় তাকে। এবং আরো একবার কিছু মানুষ নিজের নোংরা মানসিকতার পরিচয় দিয়ে ধর্মের নামে হেনস্তা করেন মীর কে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *