অন্য ধারায় বইতো গঙ্গা !
একটিমাত্র ভূমিকম্প বদলে দিতে পারে গঙ্গার গতিপথ
ডেস্ক: একটিমাত্র ভূমিকম্প। যা না হলে গঙ্গা নদী বর্তমানে যেখান দিয়ে বইছে, সেখান দিয়ে বইত না। তাঁর গতিপথ হত অন্য। সম্প্রতি এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল এক গবেষণায়। নেচার কমিউনিকেশন জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণামাফিক ওই ভূমিকম্প ২৫০০ বছর আগে হয়েছিল। বাংলাদেশ ছিল তার এপিসেন্টার। নিউ ইয়র্কের কলোম্বিয়া ক্লাইমেট স্কুলের ল্যামন্ট ডোহার্থি আর্থ অবজারভেটরির তরফে এই গবেষণা করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণ করে একটি সন্দেহ দানা বাঁধে বিজ্ঞানীদের মনে। এর পর তাঁদের একটি দল ঘটনাস্থলে যান। সেখান থেকে প্রাপ্ত নমুনা বিশ্লেষণ করেন। তার ভিত্তিতেই দাবি, নদীর গতিপথ পাল্টে দিয়েছিল ২৫০০ বছর আগের ওই ভূমিকম্প।
গবেষকদের দাবি, ঢাকা জেলার ১০০ কিমি দক্ষিণে একটি অংশে নদীপথ ছিল ২৫০০ বছর আগে। কিন্তু সেখান থেকে সরে যায় গঙ্গার প্রবাহ। প্রসঙ্গত হিমালয় পর্বত দুটি টেকটনিক প্লেটের সংযোগ রেখার উপর রয়েছে। এই প্লেট দুটির মধ্যে মাঝে মাঝেই সংঘর্ষ হয়। যার জেরে ভূমিকম্প হয়। উত্তর ভারতের শিলং এলাকার ভূমিকম্প অথবা মায়ানমার ও উত্তর পশ্চিম ভারত বরাবর ভূমিকম্প হয়েছিল বলেই গবেষকদের অনুমান।
একটি ভূমিকম্প, রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ৭.৫ বা ৮, সেটা কি এত বড় নদীর গতিপথ পাল্টে দিতে পারে ? বাস্তব বলছে পারে। আর সেটাই হয়েছে ২৫০০ বছর আগে। যদিও নদীর ১১০ মাইল বা ১৮০ কিলোমিটারের মধ্যে এই ভূমিকম্প হয়নি। কিন্তু তার পরেও প্রভাব পড়েছে নদীর উপর। এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত অধ্যাপক মাইকেল স্টেকলার একটি বিবৃতিতে বলেন, নদীপথের এত বড় সরণ আগে দেখা যায়নি।
প্রাথমিকভাবে স্যাটেলাইটের ছবি বিশ্লেষণ করা হয়। এর পর সন্দেহ দানা বাঁধতে ঢাকার দক্ষিণে ওই অংশে গিয়ে ভূমির নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সেখানেই পাওয়া গিয়েছে কিছু বালিগঠিত ভূমির অংশবিশেষ। যেগুলিকে গবেষণাগারে বিশ্লেষণ করে দেখা হয়। এই অংশগুলি উল্লম্বভাবে ভাঙা পাথরের মতো ছিল যা সাধারণত ভূমিকম্পের জেরেই হয়ে থাকে। সেগুলির বয়স দেখেই ভূমিকম্পের বয়স নির্ধারণ করা হয়।
গবেষকদের দাবি, ভবিষ্যতেই এই অঞ্চলে বড় ভূমিকম্প হতে পারে । কারণ এই অঞ্চল ভীষণ ভূমিকম্পপ্রবণ। আর একবার তা হলে প্রায় ১৪ কোটি মানুষের জীবন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।