আমফানের থেকেও বিধ্বংসী হতে পারে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস, তারই মোকাবিলায় নতুন স্ট্র্যাটেজি রাজ্য প্রশাসনের

ডেস্ক: গত বছর ঠিক এই সময় পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশায় দৈত্যের মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল আমফান। ক্ষয়ক্ষতি করেছিল মাত্রাহীন। এইবারে সেই প্রবল ঘূর্ণিঝড় এর স্মৃতি মাথায় রেখে প্রস্তুত প্রশাসন ও।

গত ১৪ই মে থেকে টানা দুই’দিন গুজরাট ও মুম্বাইয়ের বেশকিছু রাজ্যে সাইক্লোন তাউটে বেশ প্রভাব ফেলে। সেখানেও ব্যাপক মাত্রায় ক্ষতির দৃশ্য দেখা যায় এক টানা ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সেখানকার মানুষদের থাকতে হয় গৃহবন্দী।
এবারে ফের একবার ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলি। পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ এর ফলে তৈরি ‘ইয়াস’ নামের এই ঘূর্ণিঝড়টি ভয়ঙ্কর হতে পারে আমফান এর থেকেও।

আগামী সপ্তাহের মঙ্গল-বুধবার অর্থাৎ ২৫ ও ২৬ তারিখে দেখা মিলতে পারে এই ঘূর্ণিঝড়ের। হাতে রয়েছে আর মাত্র কয়েকটা দিন।
ঘূর্ণিঝড় চলাকালীন পরিস্থিতিতে ও তার পরবর্তী পরিস্থিতিতে কি পদক্ষেপ নিতে হবে সে সমস্ত বিষয়ে সর্তকতা নিতে রাজ্যের সমস্ত জেলা প্রশাসনের জন্য নির্দেশিকা জারি করল নবান্ন।

নির্দেশিকাতে উল্লেখ করা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত যারা, তাদের সমস্ত ছুটি আপাতত বাতিল করা হচ্ছে। জেলা এবং ব্লক স্তরের কন্ট্রোলরুম কে ২৪ ঘন্টা সক্রিয় থাকতে হবে। আমফানের মতো পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, তার জন্য বৃহস্পতিবার বৈঠক রয়েছে বিদ্যুৎ ভবনে। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের তরফে সমস্ত পুরসভা গুলিকে তৈরি থাকতে হবে।

এছাড়াও কোভিড বিধি মেনে সেল্টার তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুরসভাগুলিকে। বিপদজনক জায়গা চিহ্নিত হলে এলাকাবাসীকে প্রয়োজনে স্থানান্তর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গাছপালা পড়ে গেলে দ্রুত সরানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। পানীয় জলের সরবরাহের দিকে নজর রাখতে হবে। গতবারে আমফানের ফলে বহু গাছপালা পড়ে যায় যেগুলি সরাতে বহুদিন সময় ব্যয় হয়।
পাশাপাশি নিকাশি ব্যবস্থার সঠিক না থাকায় বিভিন্ন জেলায় জল বন্দিদশা ধরা পড়েছিল দীর্ঘদিন। সে সমস্ত পরিস্থিতির দ্বিতীয়বারের জন্য যাতে সম্মুখীন না হতে হয় তাই এই নতুন পরিকল্পনা।

আগামী সপ্তাহে সোমবার থেকে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়া বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এবং গভীর সমুদ্রে কেউ আছেন কিনা তা জানতে আকাশপথে নজরদারি চালাতে বলা হয় উপকূল বাহিনীকে।

আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে আগামী সোমবারের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হয়ে বুধবার বাংলার বুকে আছড়ে পড়বে।

যেহেতু উপকূলীয় অঞ্চলে ইয়াসের প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা বহুগুণ বেশি তাই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে উপকূলে অবস্থিত অঞ্চল গুলি।
পশ্চিমবঙ্গে ইয়াস অতিক্রম হওয়ার পর এটি পৌঁছে যাবে ওড়িশায়।