সেন্ট্রাল ভিস্থা পুনর্নির্মাণ কাজ বন্ধ হতে বাঁধা দিলো দিল্লি হাইকোর্ট, বললো এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়

ডেস্ক: দেশ চলছে এটি বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে।যেখানে দ্বৈত মহামারী ও লাগাতার ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে নাস্তানাবুদ সাধারণ মানুষেরা। অক্সিজেন এর হীনতা সাথে ঔষধ এর উচ্চমূল্য বেঁচে থাকা দায় হয়ে পড়েছে সকলের জন্য।

মহামারী সংক্রমণ রুখতে বহু রাজ্যে জারি করা হয়েছে আংশিক ও পূর্ণ লকডাউন। দু:বেলা খাওয়া হয়ে উঠেছে দুষ্কর।

এরইমধ্যে দিল্লিতে সবকিছু উপেক্ষা করে পুনর্নির্মাণ হচ্ছে সেন্ট্রাল ভিস্তা’র। যা তৈরি করতে আনুমানিক খরচ হতে পারে 20 হাজার কোটি টাকা। কেন্দ্র সরকারের উদ্যোগের বিরোধিতা করে প্রতিদ্বন্ধী দলগুলি। দিল্লি হাইকোর্টে এ বিষয়ে মামলা তুললে, সেখান থেকে জানানো হয়, সেন্ট্রাল ভিস্তা অত্যন্ত জরুরী নির্মাণ কাজে রয়েছে তাই কাজ বন্ধ করার প্রশ্নই ওঠে না।

কি এই সেন্ট্রাল ভিস্তা?

দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত অংশটি সেন্ট্রাল ভিস্তা নামে পরিচিত।
এই রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ইন্ডিয়া গেট 3 কিলোমিটারের ব্যবধানে অবস্থিত। যার মধ্যবর্তীস্থানে নর্থ ব্লক, সাউথ ব্লক, পার্লামেন্ট হাউস ভাইস প্রেসিডেন্ট হাউস অন্তর্ভুক্ত।

এবং কেন্দ্র সরকার এই সম্পূর্ণ এরিয়া টা কে পুনর্নির্মাণ করার উদ্দেশ্যে রয়েছে।

কেমন হতে পারে সেন্ট্রাল ভিস্তা?

ব্লু প্রিন্ট ডিজাইন ইতিমধ্যে তৈরি হয়ে গেছে।
যেখানে পুরনো পার্লামেন্টের পাশে তৈরি হতে চলেছে নতুন পার্লামেন্ট। পূর্ণ পার্লামেন্টে আকারে গোল ছিল কিন্তু নতুন যে পার্লামেন্টে তৈরি হবে তা ত্রিকোণ আকৃতির হবে। যার ইন্টেরিয়ার ভারতের জাতীয় ফুল, পাখি ও গাছের থিম দিয়ে সাজানো হবে। সাংসদদের জন্য আলাদা অফিস ও থাকার ব্যবস্থা করা হবে।

এই পার্লামেন্টে তৈরির জন্য একাধিক গাছ কাটা হয়েছে। যদিও সরকার থেকে বলা হয় কিছু গাছ অন্য জায়গায় ট্রান্সফার করা হয়েছে এবং যে অংশটি বাঁচবে সেখানে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য বেশ কিছু কাজ রোপণ করা হবে।

পার্লামেন্টের পাশে তৈরি হবে সেন্ট্রাল সেক্রেটারিয়েট। থাকবে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নতুন আবাস ভবন ও অফিস। এবং একইভাবে ভাইস প্রেসিডেন্ট এর জন্যও থাকবে আবাসভবন ও অফিস। তৈরি হবে বড় একটি পার্ক। এ ছাড়াও আরও বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য যোগ করা হবে।

শুধুমাত্র পার্লামেন্টে তৈরি করতে খরচ পড়বে 971 কোটি টাকা।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন 2019 সালে সেন্ট্রাল ভিস্তা’র পুনর্নির্মাণ কথা তোলেন, তখন তিনি বলেন এটি আত্মনির্ভর ভারতের চিহ্ন হিসাবে গঠন হবে।

Image 3 – The triangular Parliament building © India Legal Live

কেন এই পুনর্নির্মানের তোড়জোড়?

1911 সালে ব্রিটিশ শাসনে ঠিক হয়েছিল দেশের রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে স্থানান্তর করা হবে। তারই উদ্দেশ্যে দিল্লিতে নতুন পার্লামেন্ট তৈরি হয়। যা ডিজাইন তৈরি করেছিল এডউইন লুট্যেন্স হারবার্ট বেকার।

কিন্তু সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় পার্লামেন্টের লোকসভা অংশে আসলে সংখ্যা 550 টি। যেটি বাড়ানোর বিশেষ দরকার। ফলে নতুন যে পার্লামেন্টে তৈরি হবে তাতে 888 টি আসন থাকবে।

পুরনো পার্লামেন্ট ভূমিকম্প থেকে প্রতিরোধের কোন ব্যবস্থাপনা আছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কিন্তু নতুন যেটি তৈরি হবে তাতে এই ব্যবস্থাপনা নেয়া থাকবে।

তবে এই পুনর্নির্মাণকে ঘিরে বহু মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে কেউ কেউ এটির পক্ষে, আবার অন্যদিকে কেউ এটির বিপক্ষে।
বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করে জানান, বর্তমানে যে টাকা এখানে খরচ করা হচ্ছে তা শুধুমাত্র টাকা ও সময়ের বরবাদি।

অনেকে মনে করেন মহামারীর সময় সরকারকে এত টাকা খরচ সেন্ট্রাল ভিস্তা পুনর্নির্মাণ না করে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা করা উচিত।