Dilip Ghosh on Sitalkuchi: ‘জায়গায়-জায়গায় শীতলকুচি হবে’, দিলীপের প্রচারে কি নিষেধাজ্ঞা? আর্জি কমিশনে

কোচবিহারের শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার গ্রামবাসীর মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল রাজ্যরাজ্যনীতি। ভোটের দিন ঘটে যাওয়া ওই মর্মান্তিক ঘটনাকে ইতিমধ্যেই ‘গণহত্যা’ বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। নিশানা করছেন বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনকে। যদিও ওই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর ‘উস্কানিকেই’ বকলমে দায়ী করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এমন কী মমতা যার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সরব, সেই অমিত শাহও কাঠগড়ায় তুলেছেন মমতার ‘প্ররোচনাকেই’। কিন্তু প্রতিপক্ষকে আক্রমণ শানাতে গিয়ে হুমকির বাধ ভেঙে ফেলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। রবিবার বড়নগরে দলীয় প্রার্থী পার্নো মিত্রের (Parno Mitra) সমর্থনে জনসভা থেকে দিলীপ হুমকির সুরে বলেছেন, ‘বাড়াবাড়ি করলে জায়গায়-জায়গায় শীতলকুচি হবে।’ আর এরপর থেকে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। ভোটের মাঝে কী করে একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা এহেন মন্তব্য করতে পারেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। বিষয়টি নিয়ে জোর কদমে আসরে নেমে পড়েছে তৃণমূলও।

তৃণমূলের তরফে ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনে দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছে। তাতে আর্জি জানানো হয়েছে, শেষ চার দফায় দিলীপ ঘোষের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক। একইসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার আর্জিও জানানো হয়। কমিশনের কাছে রাজ্যের শাসক দলের অভিযোগ, দিলীপ ঘোষের মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট, বিজেপি নেতাদের অঙ্গুলিহেলনেই গুলি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।

রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবকে লেখা চিঠি লিখে তৃণমূল দাবি করেছে, ‘শীতলকুচিতে নৃশংস, ঠান্ডা মাথায় চার নিরীহ মানুষকে হত্যার ঘটনায় নিন্দা করার পরিবর্তে বাকি নির্বাচনে একইরকম ‘হিংসা’ চালানোর জন্য ‘উৎসাহ’ দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। যে ভোটাররা ‘কেন্দ্রীয় বাহিনীর বেআইনি কাজ বা আচরণের প্রতিবাদ করতে যাবেন, এই মন্তব্যের মাধ্যমে তাঁদের আদতে প্রত্যক্ষ হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের। তৃণমূলের আও অভিযোগ, দিলীপ ঘোষের মন্তব্য থেকেই ইঙ্গিত মিলছে, শীতলকুচিতে হিংসার ঘটনায় আদপে মদত দিয়েছিল বিজেপি’ই। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, ভারত সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গের একজন ‘তারকা প্রচারকের’ (নাম করা হয়নি) নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনী সেই ‘হিংসা’ কার্যকর করেছিল বলেও অভিযোগ করেছে তৃণমূল। যদিও তৃণমূলের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এখনও কমিশনের তরফে কিছু জানানো হয়নি।

প্রসঙ্গত, রবিবার আমজনতাকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানাতে গিয়ে প্রকাশ্য জনসভায় দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘আপনারা সকাল সকাল গিয়ে লাইন দিয়ে ভোট দিন। সেন্ট্রাল ফোর্স বুথে থাকবেই। কেউ গায়ের জোর দেখালে তো আমরা আছিই। আর বাড়াবাড়ি করলে দেখেছেন তো শীতলকুচিতে কী হল, ওরকম জায়গায়-জায়গায় শীতলকুচি হবে।’ বিজেপির রাজ্য সভাপতির এহেন মন্তব্যে ফের তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির কাছে তৃণমূল সাংসদ তথা যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ‘আর্জির’ সুরে বলেছেন, ‘ন্যূনতম মনুষ্যত্ব থাকলে দিলীপ ঘোষকে বহিষ্কার করুন। আপনি বলছেন খারাপ ঘটনা, আর আপনার দলের রাজ্য সভাপতি বলছেন বেশ হয়েছে, জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *