“দিদির ওপর ভরসা করলেই তালিবানের গুলি খেতে হবে…” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ দিলীপ ঘোষের
ডেস্ক: প্রতিবার বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে চর্চায় থাকেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। প্রতিবারই রাজ্য সরকারকে নানা রকমভাবে কটাক্ষ করে এসেছেন তিনি। তবে এবারে সরাসরি মমতা সরকারের সাথে তালিবানি সরকার গুলিয়ে ফেললেন দিলীপ ঘোষ। প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে ফের রাজ্য সরকারকে নিশানায় নিলেন তিনি। আফগানিস্তানে আটকে পড়া ভারতীয়দের বিশেষ করে বাঙালিদের দেশে ফেরানোর প্রসঙ্গে মমতা সরকারকে কার্যত তালিবান শাসনের প্রেরক বললেন দিলীপ বাবু।
বৃহস্পতিবার সকালে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে কটাক্ষ করে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “আফগানিস্তানে যারা আটকে রয়েছেন তাদের ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট কেন্দ্রী সরকার। মোদীজি ঠিক সকলকে ফিরিয়ে আনবেন। আবারো বলছি, মোদীর উপর ভরসা করুন। দিদির ওপর ভরসা করলে তালিবানদের গুলি খেতে হবে।” ব্যাস এই মন্তব্য নিয়েই উত্তেজনা তৈরি হয় রাজনৈতিক মহলে। বর্তমানে আফগানিস্তান ইস্যুতে এভাবে সরাসরি রাজ্য সরকারকে নিশানা করা ভালভাবে দেখছেন না সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ। অনেকের মতেই, এই ধরনের মন্তব্য বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে অত্যন্ত স্পর্শকাতর। সুতরাং এই সময় রাজনৈতিক বিষয়বস্তুকে গুরুত্ব না দিয়ে সরকারের উচিত এই কঠিন অবস্থার মোকাবিলা করা।
যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আফগানবাসীরা দিন কাটাচ্ছে অত্যন্ত মর্মান্তিক এবং দুশ্চিন্তা জনক। তালিবান ত্রাসে কাঁপছে আফগানিস্তান। সেখানে ভেসে রয়েছে একাধিক ভারতীয়রা। তাদেরই দেশে ফেরাতে উদ্যোগী ভারত সরকার। ইতিমধ্যে চালু করা হয়েছে ই-ভিসা। যাতে ফার্স্ট ট্র্যাকের ভিত্তিতে আটকে পড়া নাগরিকদের ভিসা দ্রুত মঞ্জুর হয়। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির কথা বিচার করেই এই ভিসা চালু করা হয়। অন্যদিকে বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বাংলার অন্তত 200 জন মানুষ এখনো আটকে রয়েছেন আফগানিস্তানে। মূলত দার্জিলিং, তরাই এবং কালিম্পং এর বাসিন্দা তারা। রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী বিদেশ মন্ত্রকের চিঠি পাঠান। সেখানে আটকে থাকা বঙ্গবাসীদের ফিরিয়ে আনার যাতে দ্রুত বন্দোবস্ত করা হয়, তেমনটাই লেখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পাশাপাশি এও বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। আমার মনে হয় এই সময় বিষয়টি নিয়ে মুখ না খুলে বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতির উপরে নজর দেওয়া উচিত। আপাতত আমাদের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে হবে এবং যা করার ভারত সরকারকেই করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন তিনি এ বিষয়ে আগ বাড়িয়ে কোন মন্তব্য করবেন না। কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে অবস্থান সাফ না করার জন্য বাকি বিরোধীরা যতই চাপ দিক না কেন তৃণমূল নেতৃত্ব বৈদেশিক বিষয় ওপর নির্ভর করতে চলেছেন।
সূত্র অনুযায়ী এই মুহূর্তে, কাবুল সহ গোটা আফগানিস্তানের অন্যান্য জায়গায় কত সংখ্যক ভারতীয় আটকে রয়েছে তা এই মুহূর্তে স্পষ্ট নয়। তবে ধারণা করা যায়, সংখ্যাটি আনুমানিক 1500 থেকে 2000 হলেও হতে পারে।