ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন নিজেই প্রতারণার শিকার, ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে নিযুক্ত হলো ইডি

ডেস্ক: ভুয়ো টিকাকান্ডের মামলায় এখনও পর্যন্ত বহু অজানা বিষয় প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে কোভিশিল্ডের নামে যে যে সলিউশনটি দেওয়া হচ্ছিল সেটি আসলে অ্যামিকাসিন। সুস্থ মানুষকে এই অ্যান্টি বায়োটিকটি দিলে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন সেই ব্যক্তি। আরো যে বিষয়টি জানা যায় তা হল দেবাঞ্জনের সাথে তৃণমূলের বহু হেভিওয়েট নেতাদের যোগসূত্র আছে।

এরপরে বিষয়টি কতদূর এগিয়েছে তা যাচাই করতে এবার তদন্তে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এগিয়ে এলো এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। এই ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে কারা জড়িত আছে? এবং আর্থিক লেনদেন কিভাবে সে সম্পন্ন হতো? এসব বিষয়ে তদন্ত করতে রাজ্যের ভ্যাক্সিনেশন স্ক্যামের তদন্তে নিযুক্ত হলো কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।

দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে কতগুলি এফআইআর দায়ের হয়েছে তা জানতে চেয়েছে ইডি আধিকারিকরা। সাথেই লালবাজার থেকে কসবা থানা এফআইআর ও মানি ট্রেল সম্পর্কিত সমস্ত কপি চাওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার একটি জায়গায় ইডি রেড করার কথা রয়েছে। দেবাঞ্জন এর টাকার উৎস এবং এতদিনের করা কর্মকান্ডের সমস্ত নথি যাচাই করছে ইডি। সূত্রে জানা যায় এফআইআর -এর সমস্ত কপি খতিয়ে দেখার পরেই দিল্লিতে এই বিষয়ে কমিটি গঠন করে সেই বৈঠকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এর আগেও রেমডিসিভির দুর্নীতির মামলাতেও যুক্ত হয়েছিল ইডি।

সোমবার দেবাঞ্জন দেবের দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কাঞ্চন ও শরৎ নামে এই দুই অভিযুক্ত বহুদিন যাবত কাজ করছে দেবাঞ্জনের সাথে। এদের মধ্যে কাঞ্চন দেবাঞ্জনের দূর সম্পর্কের দাদা হন। তিনি অফিসের যাবতীয় জিনিসপত্র দেখাশোনা করতেন। কিন্তু যেহেতু তিনি দেবাঞ্জনের ভুয়ো আইএএস হওয়ার বিষয়টি জানতেন। তাই সেটা সুযোগ নিতেন কাঞ্চন। অফিসের কোনো কিছু কেনার হলে যে টাকার প্রয়োজন তার দ্বিগুণ টাকা আদায় করে নিতেন দেবাঞ্জনের থেকে।

কিন্তু সব ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর তদন্তকারীদের কাছে নিজের আফসোসের কথা জানিয়েছেন দেবাঞ্জন। বলেছেন, “আমি তো নিজেই প্রতারিত। দাদাই প্রতারণা করত আমার সঙ্গে।”

এবং অপর সঙ্গী শরৎ পাত্র এক জন স্বাস্থ্য কর্মী। আর সেই সুযোগে কসবা, নর্থ সিটি কলেজে ভ্যাক্সিনেশন ক্যাম্পের আয়োজন করা তার পক্ষে সহজ হয়েছিল। এবং তারই বুদ্ধিতে অ্যামিকাসিন কে কোভিশিল্ড বলে চালানো হতো।

দেবাঞ্জন সহ তার বাকি দুই সহযোগীর ওপরও খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করা হয়েছে। যেখানে এই তিন ধৃতকে মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে পেশ করা হবে। এবং সেখানেই সরাসরি প্রশ্ন করে নেবেন তদন্তকারীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *