দুই কিশোরীর ধর্ষণের দায় থেকে হাত গুটিয়ে নিলেন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী, অভিযোগ তুললেন নির্যাতিত ও তার পরিবারের ওপর
ডেস্ক: আমরা একবিংশ শতাব্দীতে এসে পৌঁছালেও এখনো পর্যন্ত এমন কিছু বিকৃত মানসিকতার মানুষ আমাদের সমাজের চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে যারা কোন নারীর ওপর ধর্ষণ হলে সেই নারীকেই দোষের কাঠগোড়ায় তোলে।
গোয়ার সমুদ্র সৈকতে দুই নাবালিকাকে শারীরিক নির্যাতন ও দুই নাবালককে মারধরের ঘটনায় এমন কিছু মন্তব্য করে বসেন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত জার কারণে তাকে বিতর্কের মুখে পড়তে হয়। সম্প্রতি পানাজির বেনাউলিম সৈকতে 4 কিশোর-কিশোরী নির্যাতনের শিকার হয়। চার ব্যক্তি নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে গভীর রাতে সমুদ্রের পাড়ে বসে থাকার জন্য 2 কিশোরকে মারধর করে এবং দুই কিশোরীকে ধর্ষণ করে। ঘটনায় চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হলেও বুধবার অধিবেশন চলা কালীন এক সাংসদ বলেন, এক প্রভাবশালী ব্যক্তি অভিযুক্তদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।
এই ঘটনার প্রসঙ্গেই বুধবার সংসদে দাঁড়িয়ে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত বলেন, “14 বছর বয়সীরা রাত অবধি সমুদ্র সৈকতে থাকলে অভিভাবকদের হস্তক্ষেপ করা উচিত। সন্তানরা যেহেতু কথা শোনে না বলে সরকারের ও পুলিশের ওপর দোষ চাপিয়ে দেওয়া যায় না। আমরা পুলিশকে দোষারোপ করি কিন্তু এটাও ভাবা উচিত যে দশ জন সমুদ্রসৈকতে পার্টি করতে গেলে তাদের মধ্যে চারজন সারারাত সেখানেই থেকে গেল, বিশেষ করে তারা যখন নাবালক। এই বয়সীদের সমুদ্রসৈকতে একা একা রাত কাটাতে দেওয়া উচিত না ”
And CM should quit & go home for such preposterous ‘pearls of wisdom’ ! pic.twitter.com/HV0uTNBbV0
— Randeep Singh Surjewala (@rssurjewala) July 29, 2021
এমন মর্মান্তিক ঘটনার তদন্তের নির্দেশের বদলে অভিভাবকদেরই দোষারোপ করায় বিরোধীদের চরম আক্রমণের মুখে পড়েছেন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর এইরকম মন্তব্য শোনার পরেই সমালোচনায় সরব হয় বিরোধীদলরা। তারা মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি করেন। গোয়া কংগ্রেসের মুখপাত্র অ্যালটোনি ডি’কোস্টা বলেন, রাত বেরতে আমরা ভয় পাবো কেন? অপরাধীদের জেলে থাকা উচিত যাতে সাধারণ মানুষ স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারে।” কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিং সূর্যেওয়ালাও টুইট করে মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফা দাবি করেন।
গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির প্রধান বিজয় সরদেশাই বলেন, মুখ্যমন্ত্রী অত্যন্ত খারাপ মন্তব্য করেছেন। নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার সরকার ও পুলিশের কর্তব্য। যদি তা সম্ভব না হয়, তবে মুখ্যমন্ত্রীর ওই পদে বসার কোনো অধিকার নেই।