জগন্নাথ দেবের ভোগ গ্রহণের পরেই সুগন্ধ ছড়ায় !

ডেস্ক: জগন্নাথদেবের প্রসাদকে বলা হয় মহাপ্রসাদ। আজও বিশেষ বিশেষ দিনে প্রায় এক লক্ষ ও উৎসবের সময় প্রায় ১০ লক্ষ লোক মহাপ্রসাদ গ্রহণ করেন। কথিত আছে, জগন্নাথধামে কখনও প্রসাদ উদ্বৃত্ত থাকে না আবার কমও পড়ে যায় না। জগন্নাথ মন্দিরের রান্নাঘরকে, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রান্নাঘর মনে করা হয়। এমনও বলা হয়, কোনও ভক্তই প্রসাদ খেয়ে শেষ করতে পারেন না।

পুরীতে রন্ধনশালাটি দৈর্ঘে দেড়শো ফুট ,প্রস্থে একশো ফুট এবং উচ্চতা কুড়ি ফুট। এর ভিতরে আছে ৩২টি রন্ধন কক্ষ। রান্নার কাজে যুক্ত থাকেন ৬০০ রাঁধুনী ও ৪০০ সহযোগী। তাঁরা প্রত্যেকদিন প্রভু জগন্নাথের জন্য নানাবিধ সুস্বাদু আহার্য বানান। রাঁধুনি ছাড়া রান্নাঘরে কেউ ঢুকতে পারেন না। রন্ধনশালার ভেতরে আছে ২৫০ টি অগ্নিযন্ত্র বা উনুন। প্রায় সমস্ত উনুন মাটি দিয়ে তৈরি, মাত্র ১০টি উনুন সিমেন্ট দিয়ে তৈরি। রন্ধনশালায় তিন প্রকার উনুন ব্যবহার করা হয় অন্ন চুলি, আহিয়া চুলি ও পিঠা চুলি। যে উনুনে ভাত বা অন্ন রান্না করা হয় সেই উনুনগুলি দৈর্ঘ্যে চার ফুট, প্রস্থে আড়াই ফুট ও উচ্চতায় দুই ফুট।

ভোগ রান্নার জন্য সাতটি বাসন একে অপরের ওপরে রাখা হয়। প্রতিটিই মাটির পাত্র। মাটির পাত্রে, কাঠের উনুনে ভোগ রান্না হয়।সবচেয়ে ওপরের পাত্রের ভোগ সবার আগে তৈরি হয়, তার পর নীচের দিকে এক এক করে। রন্ধনশালার চত্বরে দুটি কুয়ো আছে, যাদের নাম গঙ্গা ও যমুনা। কুয়াগুলির ব্যাস ১০ ফুট গভীরতা প্রায় ১০০ ফুট। অত্যন্ত পবিত্র এই কুয়ো দুটির জল ব্যবহার করা হয় রান্নার কাজে। প্রত্যেকটি পাত্রে আলাদা আলাদা খাদ্যবস্তু রান্না করা হয়।

কথিত আছেদেবী লক্ষ্মী স্বয়ং রান্নার তদারকি করেন। তিনি রান্না করেন বলেই জগন্নাথদেবের মহাপ্রসাদ এত সুস্বাদু। তাঁর রান্না খেয়ে প্রভু জগন্নাথ তৃপ্ত হন ও সুস্থ থাকেন। রন্ধনশালা থেকে শয়ে শয়ে খাদ্যবোঝাই পাত্র যখন প্রভু জগন্নাথকে উৎসর্গ করার জন্য মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন পাত্রগুলি থেকে কোনও খাদ্যের সুগন্ধ ছড়ায় না। কিন্তু প্রভু জগন্নাথের সেবার পর মন্দির থেকে মহাপ্রসাদ ফেরত আনার সময় সারা মন্দির চত্ত্বরে সুগন্ধ ছড়ায়। ভক্তেরা বিশ্বাস করেন প্রসাদে ভগবানের স্পর্শ লাগার কারণেই এই সুগন্ধ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *