আফগানের বুকে নারীশক্তির সমাবেশ, সামাজিক অগ্রাসনের বিরুদ্ধে হাতিয়ার তুলে নিলেন তারা

ডেস্ক: একবিংশ শতাব্দীতে এসেও আমরা দেখেছি সমাজের বহু স্তরে নারীরা সামাজিক সুযোগ সুবিধা থেকে বিরত। ওমেন এম্পাওয়ারমেন্ট বা নারী ক্ষমতায়ন বিষয় বস্তু যতই ট্রেন্ডে থাকুক না কেনো, এখনো পর্যন্ত সমাজের একাধিক নিচু মানসিকতার মানুষ নারীদের অধিকার, তাদের এগিয়ে যাওয়া হজম করতে পারে না।

তবে অবশেষে সেই নিচু মানসিকতার সাথে লড়তে, সামাজিক অগ্রাসনের বিরুদ্ধে নারীশক্তির পরিচয় দিয়ে আফানিস্তানের বুকে অস্ত্র হাতে নামলেন মহিলারা। তালিবান দৌরাত্ম্য শেষ করতেই এই পদক্ষেপ।

এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে তালিবান দৌরাত্ম্য এর বিরুদ্ধে লড়াই চলছে আফগানিস্তানের। তালিবান জঙ্গিদের দাপটে অতিষ্ট আফগানিস্তানের বাসিন্দারা। বিগত কয়েক বছরে জঙ্গিরা বাদাখাস্তান সহ একাধিক রাজ্যকে দখল করেছে। সেখানকার মহিলাদের বিরুদ্ধে জারি করেছে নানা ধরনের বিধি নিষেধ। যেখানে শিক্ষা থেকে স্বাধীনভাবে চলাফেরা এবং পোশাকের ওপরেও জারি হয়েছে নানা বাধ্যবাধকতা। একটি অঞ্চলে নারীদের সর্বক্ষণ বোরখা পড়ে থাকার ফতেয়া ও জারি করা হয়েছে।

যে সমস্ত অঞ্চলে তালিবান দাপট চরমে সেখানে মেয়েদের স্কুলে যাতায়াত ও করা হয়েছে বন্ধ। পুরুষ অভিভাবক ছাড়া বাড়ি থেকে বের হতে ও বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার নিষেধাজ্ঞাও জারি হয়েছে। এর ও চূড়ান্তে গিয়ে পশুপালনের কাজেও মহিলাদের হাত লাগানো নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।

এই বন্দীদশা জীবন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আফগানিস্তানের শহর অঞ্চলের শতাধিক মহিলা হাতে অস্ত্র নিয়ে পথে নামেন এবং তালেবান বিরোধী স্লোগান দেন। জানা গেছে, যে সমস্ত মহিলারা নিজেদের পরিবার, সন্তান হারিয়েছেন বা কোনো মতে অত্যাচারের হাত থেকে পালিয়ে আসতে পেরেছেন তারাই এখন তালিবান বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে।

অধিকাংশ মহিলাই যুদ্ধক্ষেত্রে না হলেও সেনাবাহিনীদের মনোবল বাড়াতেই এই পদক্ষেপ নেন। গত মাসেই আন্দোলনকারী রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে মহিলাদের প্রশিক্ষণ ও যুদ্ধক্ষেত্রে অংশ নেয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন। একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে আফগানিস্থানে অতি সংরক্ষনশীল পরিবারের মেয়েরাও উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে চায়, স্বাধীন জীবন যাপন করতে চায়, পরিবারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনেও ইচ্ছুক। কিন্তু তালিবান শাসিত আইন এই সমস্ত কিছুর বিপরীতে। একধারে জোর করেই ঠেলে দিচ্ছে নারীদের অন্ধকারে। তাই নিজেদের নূন্যতম অধিকার রক্ষার স্বার্থে আজ পথে নেমেছেন তারা।

আবার মহিলাদের হাতে মৃত্যু যে কোনো উগ্র সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের জন্য লজ্জাজনক। সিরিয়াতেও আইসিসি জঙ্গীরা মহিলাদের হাতে মৃত্যুকে পরাজয় হিসেবে মনে করেন। তবে কিছু দশক ধরে সংখ্যায় কম হলেও আফগানিস্তান সেনায় মহিলারা অংশগ্রহণ করতে শুরু করেন। তবে সেখানেও পুরুষ সহকর্মীদের কাছে হেনস্তার শিকার হতে হয় তাদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *