এক দিনেই মত বদল, আটক হলো কাবুল বিমানবন্দর, দেশের বাইরে যেতে পারবে না এমনটাই তালিবানি নির্দেশ

ডেস্ক: “তালিবানদের বিশ্বাস করা যায় না। তাদের মুখে এক কাজে আরেক।” এমনটাই বক্তব্য বহু মানুষের। অবশ্য এ কথা মিথ্যে কিছুই নয়। প্রকাশ্যে এক প্রতিশ্রুত দিলেও কাজে হচ্ছে অন্য কিছুই।

তা মেয়েদের স্বাধীনতা নিয়েই হোক বা শান্তি পূর্ণ পরিবেশ গঠন করা নিয়ে। সমস্ত কিছুতেই হিংস্রতা দেখাচ্ছে তালিবানরা।

তালিবানদের মন বদল এর উদাহরণ দেখা গেল মঙ্গলবার। সপ্তাহের প্রথম দিনেই নিজের উদারতা প্রমাণ করতে একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে তালেবানের মুখপাত্র সুহেল শাহিন বলেছিলেন, “ভয় পেয়ে দেশ ছেড়ে যাবেন না। আমরা একসঙ্গে সরকার গড়ব। তবে কেউ যদি একান্তই যেতে চান তাদের আটকানো হবে।” এইরূপ মন্তব্যের পর রাত কাটতে না কাটতেই মঙ্গলবারই ফের মত বদলে অপর মুখপাত্র জাবিদুল্লাহ মুজাহিদ জানান, বিদেশিদের যেতে দেওয়া হলেও আফগান নাগরিকদের কাবুল বিমানবন্দরে যাওয়া থেকে আটকানো হবে।

এবং মঙ্গলবারই সাংবাদিক বৈঠকে নতুন করে আরও একাধিক ফতেয়া জারি করে তালিবান। যেখানে জাবিদুল্লাহ মুজাহিদ জানান, “বিমানবন্দরের যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বিদেশিদের বিমানবন্দরের যেতে দেওয়া হলেও আফগান বাসীদের ওই রাস্তা ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। বিমানবন্দরেও যেতে দেওয়া হবে না। আমরা আফগান নাগরিকদের অন্য দেশে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেব না আর। যেভাবে তাদের অন্য দেশে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তাতেও আমরা খুশি নই। আফগানিস্তানের চিকিৎসক ও শিক্ষকরা দেশ ছেড়ে যেতে পারবেন না। তাদের নিজেদের কর্মক্ষেত্রেই কাজ চালিয়ে যাওয়া উচিত।”

এছাড়াও যারা কাবুল বিমানবন্দরে ভিড় জমিয়েছে তাদের উদ্দেশ্যে কড়া নির্দেশ দিয়েছে তালিবান। বিমান বন্দর ছেড়ে ফিরে আসতে হবে দেশে। একইসঙ্গে আশ্বাস দিয়ে বলা হয়েছে, শহরে ফিরলেও কোন শাস্তির মুখে পড়তে হবে না তাদের। চাকরিরত মহিলাদের জন্য ফতেয়া করেছে তালেবান। বলা হয়েছে সুষ্ঠ নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি না করা অবধি মহিলারা যেন বাড়িতেই থাকেন, অফিস না যান।

এছাড়া আগামী 31 আগস্টের মধ্যে উদ্ধারকার্য শেষ করার কথা জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এরপরে তালিবানদের তরফে জানানো হয় 31 আগস্টের পর একদিনও বেশি সময় দেয়া যাবে না। ওই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দেশ ছাড়তে হবে না হলে পরিণতি খারাপ হবে।

14 আগস্ট থেকে প্রায় 70 হাজার মানুষকে কাবুল থেকে উদ্ধার করে আনা হয়। এদের মধ্যে মার্কিন নাগরিকদের পাশাপাশি আফগানিস্থানের বাসিন্দারাও রয়েছেন। তবে তালিবানদের দাবি, বিভিন্ন দেশ মূলত আফগানিস্তানের মহিলা ও শিক্ষিত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছে।

তবে তালিবানের নির্দেশের জবাবে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন পেনস্কি জানান, আমেরিকা যাদের ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা সুরক্ষিতভাবেই বিমান বন্দরে পৌছাতে পারবেন। তালিবানের নির্দেশের তাতে বিশেষ কোনো ফারাক পড়বেনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *