শহীদ স্মরণে জননেত্রীর সঙ্গ দেবেন ভোট কৌশলী পিকে, জেনে নিন আজকের কর্মসূচি

ডেস্ক: পুরো একবছর প্রতিক্ষার পর এসেছে আজকের সেই দিন “একুশে জুলাই”। শহীদ স্মরণের এই বিশেষ দিনে রাজ্যের শাসক দল তথা তৃণমূল সুপ্রিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতি বছর নিয়মিত ধর্মতলায় একটি জনসভার আয়োজন করেন এবং সেখানে বক্তৃতা রাখেন।

তবে মহামারীর কারণে গত বারের মত এবারেও শহীদ স্মরণে একুশে জুলাই এর সভা হবে ভার্চুয়ালি। ভার্চুয়াল মাধ্যমে ভাষণ দেবেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে রাজ্যে জেলায় জেলায় প্রস্তুতি সারা হয়ে গেছে। লাগানো হয়েছে জায়েন্ট স্ক্রিন। তুমি শুধু এ রাজ্যেই নয় গুজরাট ও উত্তরপ্রদেশের মত বিজেপির ঘাঁটি গুলি তেও জায়ান্ট স্ক্রিন এর মাধ্যমে শোনানো হবে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বক্তৃতা। অর্থাৎ রাজ্যের গন্ডি পেরিয়ে এবার সর্বভারতীয় স্তরে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের পদক্ষেপ নিচ্ছে তৃণমূল।

একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয়ের পর কি বার্তা দিতে চলেছেন জননেত্রী এই নিয়ে বেশ কৌতুহলী তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। তবে আন্দাজ করা যাচ্ছে এবারে এমন কিছু হতে চলেছে যা আগে হয়নি। অর্থাৎ অভিনব কিছু।

জানা যায় গুজরাট ও উত্তরপ্রদেশ সহ দিল্লি এবং ত্রিপুরাতেও থাকবে জায়েন্ট স্ক্রিন এর ব্যবস্থা। এছাড়াও রাজ্যের শহর থেকে ব্লক এমনকি গ্রামেও দেখানো হবে জায়েন্ট স্ক্রিনের মাধ্যমে বক্তিতা।

একুশের কর্মসূচি

প্রতিবারের মতো যেহেতু এবারে সরাসরি সভা হবে না তাই নিয়মে কিঞ্চিৎ পরিবর্তন এসেছে। তৃণমূল ভবনের বাইরে বানানো হয়েছে অস্থায়ী বেদি। সেখানেই ভাষণ শোনানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সকল বিধায়কদের নিজেদের এলাকায় থাকার জন্য জানানো হয়েছে।

ধর্মতলার মঞ্চে উপস্থিত থাকতে চলেছেন সায়নী ঘোষ, বিশ্বজিৎ দেব, জাভেদ খানরা, রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম। এছাড়াও রাজ্য ভিন রাজ্যের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকতে চলেছেন। আরও যেই বিশেষ ব্যক্তিত্ব মঞ্চে নজরে আসতে চলেছেন তিনি হলেন প্রশান্ত কিশোর।

এবারের একুশে জুলাই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ একুশের বিধানসভা নির্বাচন ছিল অত্যন্ত সেন্সিটিভ। যেখানে খুব সহজেই ট্রিপল ডিজিটে রাজ্যে ক্ষমতার আসনে বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং তার পর থেকেই তাকে বর্তমানে নরেন্দ্র মোদীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা হচ্ছে সর্বভারতীয় স্তরে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে এতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে জাতীয় স্তরে আনার চেষ্টায় ছিলেন। কিন্তু একুশে নির্বাচনের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে ঘিরে বহু রাজনৈতিক দল একত্রিত হয়েছে মোদি বিরোধী মোর্চা গড়ে তুলতে।

একুশে জুলাই এর প্রেক্ষাপট

1993 সালে পুলিশের গুলিতে 13 জন কংগ্রেসের যুব কর্মীর মৃত্যু হয়। তারপর থেকেই 21 শে জুলাই শহীদ স্মরণ দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। 2006-07 সালে জমি অধিগ্রহণ আন্দোলনের হাত ধরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনীতিতে উত্থান হয়। 2008 সালে স্লোগান তোলেন, “একুশে জুলাই ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই”। এবং সে বছরই 21 জুলাই ধর্মতলা মঞ্চে রেকর্ড গড়া ভিড় জমে।।

এবং এই মর্মান্তিক ঘটনার স্মরণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে একটি পোস্ট করেন যেখানে তারা লিখেন 1993 সালের সেই মর্মান্তিক ঘটনা এখনো টাটকা এবং বেদনাদায়ক। সরকারের নিষ্ঠুরতায় 13 জন নিরীহ কর্মী হারিয়েছেন প্রাণ।