বাঁকুড়ায় শিশু পাচার করতে গিয়ে ধরা পড়লো স্কুল অধ্যক্ষ, গ্রেফতার হল তিনি সহ আট জন শিক্ষক-শিক্ষিকা

ডেস্ক: সমাজের নৈতিকতার পথ প্রদর্শনকারীই ধরা পড়লো অনৈতিক চক্রান্তে। বাঁকুড়ার জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ কমলকুমার রাজোরিয়া কে গ্রেপ্তার করা হয় শিশু পাচার করার অভিযোগে। অধ্যক্ষ সহ স্কুলের আরো 7 জন শিক্ষিক-শিক্ষিকাদের করা হয়েছে গ্রেফতার। পুলিশি তদন্তে কমলকুমার ও এক শিক্ষিকা বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে মোট পাঁচটি কন্যা শিশু। শিশুগুলোকে ভিন রাজ্যে পাচার করা হচ্ছিলো কিনা তা নিয়ে তদন্ত করছে পুলিশকর্মীরা।

আট জন ধৃতদের মধ্যে তিনজন মহিলা। এদের মধ্যে সুষমা শর্মা নামে এক শিক্ষিকা ও কমলকুমারের কাছ থেকে ন’মাসের কন্যা শিশু কেনেন। পুলিশি তদন্তে জানা গেছে সুষমা নিঃসন্তান। দুর্গাপুরের স্টিল প্লান্ট মেন গেট এলাকা থেকে 7 দিন আগে এই ন’মাসের কন্যা শিশুকে পাচার করে এনেছিলেন কমলকুমার।

এছাড়াও কমলকুমারের বাড়িতে ও কয়েকটি শিশু ছিল। সব মিলিয়ে মোট পাঁচটি শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, দূর্গাপুর স্টিল প্লান্ট মেন গেট সংলগ্ন কাদা রোডের নিষিদ্ধপল্লি থেকে শিশুদের মোটা অংকের টাকা দিয়ে কিনে এনে পাচার করার পরিকল্পনা ছিল এই অধ্যক্ষের। এমনটাই জানা যায় কমলকুমার রাজস্থানে বাসিন্দা। সুতরাং রাজস্থানেও শিশু পাচার পরিকল্পনা ছিল বলে আন্দাজ করা হচ্ছে। পাচারকারীদের মধ্যে এক জন রয়েছে চায়ের দোকানিও। তিনি ক্রেতা এবং বিক্রেতা দের মধ্যে লিঙ্ক ম্যান হিসেবে কাজ করতেন বলে জানা যায়।

ঘটনার সূত্রপাত রবিবার দুপুরে। অভিযোগ ওঠে, স্কুল লাগোয়া বাঁকুড়া পুরুলিয়ার জাতীয় সড়কের ওপর একটি শিশুকে জোর করে তোলার চেষ্টা করছিলেন কমলকুমার। এবং সেই সময় ভ্যানের ভেতর বসেছিলেন দুই মহিলা। তাদের সাথে গাড়ির মধ্যে বসেছিল আরো অন্য দুটি শিশু। এই ঘটনাটির প্রত্যক্ষদর্শী হয় কালপাথর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুব্রত সাহানা। তিনি বিষয়টি সন্দেহজনক আঁচ করে চিৎকার করতে শুরু করেন। তার চিৎকারে বেশ কিছু স্থানীয় মানুষ ছুটে আসেন। এবং তা দেখে পালিয়ে যান অধ্যক্ষ। স্থানীয়রা গাড়ির ভেতরে থাকা দুই মহিলা ও চারটি শিশু কে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। তাদের অসংলগ্ন উত্তরে স্থানীয়দের সন্দেহ দৃঢ় হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছান পুলিশ। কমলকুমার কে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি তুলে জাতীয় সড়কে কিছুক্ষণের জন্য অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন এলাকাবাসীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *