মিশ্র ভ্যাকসিন নিলে নাশ হবে ডেল্টা স্ট্রেন? জেনে নিন কি বললো WHO

ডেস্ক: দিন দিন কোরোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আছড়ে পড়ার রাস্তা প্রশস্ত হয়ে উঠছে। দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপ কোন অংশে কম হলে মানুষ ব্যস্ত হয়ে পড়ছে স্বাভাবিক জীবনযাপনে। যেখানে কোরোনা বিধির সম্পূর্ণটা মেনে চলা সম্ভব হচ্ছে না সাধারণ মানুষদের ক্ষেত্রে। আর এর থেকেই ভয় জন্মাচ্ছে তৃতীয় ঢেউয়ের।

কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ে ভাইরাসের যেই মিউট্যান্টটি ছড়িয়ে পড়তে চলছে তা হলো ডেল্টা প্লাস। এই ডেল্টা প্লাস ভেরিয়েন্ট B.1.617.2 নামেও পরিচিত। এই ভেরিয়েন্টটি এতটাই ছোঁয়াচে যে মানব দেহে খুব সহজেই এটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। এবং ততটাই বিপদজনক। এমনকি একটা রিসার্চে জানা গেছে ডেল্টা প্লাস 50 শতাংশ বেশি ছোঁয়াচে আলফা ভেরিয়েন্ট থেকে, যা দ্বিতীয় ঢেউয়ের সক্রিয় ছিল। এবং এটি B.1.1.7 নামেও পরিচিত। এই আলফা ভেরিয়েন্ট আবার মূল কোভিড ভাইরাসের থেকেও সংক্রামক ছিল যা চায়না তে উৎপত্তি হয়েছিল।

সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে তৃতীয় ঢেউয়ে কোরোনার কি ভয়াবহ রূপের দেখা মিলতে চলেছে। তবে যে সমস্ত ব্যক্তিরা ভ্যাকসিন এই দুটো ডোজ ই ইতিমধ্যে নিয়ে ফেলেছে তাদের পক্ষে এই স্ট্রেনের সাথে লড়াই করা সহজ হবে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রত্যেকটি মানুষকে ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য তৎপর হয়ে উঠতে হবে। ইতিমধ্যে গোটা ভারতের 37.7 কোটি মানুষের টিকাকরণ হয়েছে। তারমধ্যে 7.33 কোটি মানুষের পূর্ণ টিকা করণ হয়েছে। অর্থাৎ গোটা দেশের 5.4% মানুষের পূর্ণ টিকাকরণ হয়েছে।

বর্তমানে দেশে দুই ধরনের ভ্যাকসিনের প্রয়োগ বেশি করা হচ্ছে কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন। তবে রাশিয়ান ভ্যাকসিন স্পুটনিক-ভি ইতিমধ্যে ভারতে চলে এলোও তার ব্যবহার সেই পরিমাণে হচ্ছে না। কারণে এই ভ্যাকসিনের মূল্য বাকিগুলোর থেকে একটু বেশি। এবং সংখ্যায় ও এটি সীমিত। তাই তো প্রাইভেট হসপিটাল গুলিতেই পাওয়া যাচ্ছে।স্পুটনিক-ভি এর ব্যবহার বাড়ানোর জন্য সেপ্টেম্বর থেকে দেশের তৈরি হতে চলেছে ভ্যাকসিনটি।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাশিয়ার স্পুটনিক-ভি এবার থেকে তৈরি হবে সেরামে।

অন্যদিকে সামনে আসছে অন্য রকম চিন্তা ভাবনা। দুই বারে দুই রকম ভ্যাকসিন। প্রথম ডোজ কোভিশিল্ড ও দ্বিতীয় ডোজ কোভ্যাক্সিন। আবার নয়তো প্রথম ডোজ কোভ্যাক্সিন ও দ্বিতীয় ডোজ কোভিশিল্ড। কি হবে এমন করলে? টিকা সংকটের মধ্যে এইরকম প্রশ্ন দেখা দিয়েছে মানুষের মধ্যে।

Dr. Soumya Swaminthan

কোথাও কোথাও আবার ভুল করে এই ভাবেই টিকা দেওয়া হয়েছে। তবে এই মিশ্র টিকা নেওয়ার প্রবণতাকে এবার বিপদজনক আখ্যা দিলো WHO। একাধিক সংস্থার তৈরি ভ্যাকসিনের অদলবদল করে পাঁচমিশালী ভ্যাকসিন নিলে হয়ে উঠতে পারে শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক, এমনটাই জানিয়েছেন বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন।

তিনি বলেছেন, “এই নতুন ট্রেন্ড বিপদজনক। কারণ পাঁচমিশালী ভ্যাকসিন এর ক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞতা নেই, পর্যাপ্ত তথ্যও নেই।” মিশ্র টিকা কোরোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কতটা কার্যকর, তা নিয়ে গোটা বিশ্বে এই মুহূর্তে গবেষণা চলছে। কিন্তু ভারতে এখনো এই বিষয়টি চালু হয় নি। তবে আগামী দিনে মিশ্র টিকার ব্যবহারের সম্ভাবনা এ দেশেও চালু হতে পারে।

বিশ্বে জুড়ে অনেক বিজ্ঞানীরা মনে করেন, দুই রকম ভ্যাকসিন নিলে তাতে লাভ বেশি। কিন্তু এই মুহূর্তে এ ব্যাপারে দেশের সাধারণ মানুষকে সতর্ক করছে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *